রাজ্য

বেশি টাকা দিয়ে আর বাসমতী চাল নয়, একই সুগন্ধে এবার কিনুন বাংলার নিজস্ব সরু চাল, দাম অনেক কম

বাসমতী চালের সুগন্ধেই বাজিমাত করে সে। যেমন স্বাদ, তেমন গন্ধ। কিন্তু এই চাল সর্বসাধারণের নাগালের বাইরে। কোনও উৎসব-অনুষ্ঠান ছাড়া এই চালের ভাত পাতে তেমন একটা পড়ে না মধ্যবিত্ত বাড়িতে। কিন্তু এবার বাসমতীর দিন মনে হয় শেষ। এবার মধ্যবিত্তের পাতেও পড়বে সরু সুগন্ধি চালের ভাত। আর অত্যন্ত কম দামেও মিলবে এই চাল।

জানা যাচ্ছে, চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্রে উদ্ভাবিত এই চালের নাম রাখা হয়েছে চুঁচুড়ামতী। এই চাল এবার বাসমতীর বাজারে থাবা বসাতে আসছে। এই চালের সুবাস বাসমতীর থেকে খানিক কম হলেও স্বাদে তা বলে বলে টেক্কা দেবে বাসমতীকে।

হিমালয় সংলগ্ন রাজ্যে চাষ হয় বাসমতীর। কিন্ত্য সেই চালের দাম অনেক বেশি। তবে চুঁচুড়ামতী ফলবে বাংলাতেই। সেই কারণে এই চালের দাম বাসমতীর থেকে অনেকটাই কম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্য ও জাতীয় স্তরের নানান পরীক্ষায় ইতিমধ্যেই উত্তীর্ণ হয়েছে এই চুঁচুড়ামতী। এখন অপেক্ষা স্টেট ভ্যারাইটি রিলিজ কমিটির অনুমোদনের।

সূত্রের খবর, রাজ্যে বাসমতীর যা ফলন হয়, সেই তুলনায় চুঁচুড়ামতীর ফলন হবে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি। কলকাতায় বাসমতীর দাম ৯০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা। তবে চুঁচুড়ামতীর বাজার শুরু হলে তার দাম অনেকটাই কম হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

আসলে, হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীরে যে বাসমতীর ফলন হয়, সেই বাসমতী বাংলায় চাষ করলে ফলন অনেকটাই কম হয়। আর সেই চালে বাসমতীর মতো তেমন গন্ধও থাকে না। সেই কারণে এবার বাংলার আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে চাষ হবে চুঁচুড়ামতীর।

জানা যাচ্ছে, এই চুঁচুড়ামতী নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে শুরু হয় পরীক্ষা। ফার্ম ট্রায়াল, মাল্টি লোকেশন ট্রায়াল, স্টেশন ট্রায়াল, এমন নানান ধাপ পেরিয়েছে বাংলার এই চাল। এবার রাজ্যের স্টেট ভ্যারাইটি রিলিজ কমিটির অনুমোদন মিললেই বাজারে ছেয়ে যাবে চুঁচুড়ামতী।

কৃষিবিজ্ঞানীদের কথায়, বোরো ও খারিফ মরশুমে রাজ্যের যে কোনও প্রান্তেই এই চুঁচুড়ামতী চালের চাষ করা যাবে। খরিফ মরশুমে অরায় সাড়ে চার টন আর বোরো মরশুমে প্রায় ৫.৮৯ টন এই চাল উৎপাদন হবে বলে জানাচ্ছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা। ছাড়পত্র মিললেই এই চুঁচুড়ামতী চালের বীজ কৃষকদের দেওয়া হবে।

Back to top button
%d bloggers like this: