জামিনের আবেদন খারিজ, অসুস্থতার যুক্তি দিয়ে কোনও লাভ হল না, গরু পাচারকাণ্ডে অনুব্রতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ আদালতের

অসুস্থতার যুক্তি দিয়ে লাভের লাভ কিছুই হল না। ফের একবার অনুব্রতর জামিনের আবেদন খারিজ করল আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত (CBI Court)। এবার অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হল আদালতের তরফে। আগামী ৭ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুব্রত থাকবেন জেলেই। এরপর তাঁকে তোলা হবে আদালতে।
চারদিনের সিবিআই হেফাজত শেষে আজ, বুধবার ফের একবার অনুব্রত মণ্ডলকে সিবিআই আদালতে তোলা হয়। এদিন তৃণমূল নেতার শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তাঁর জামিনের আবেদন করেন অনুব্রতর আইনজীবী। বিচারককে তিনি বলেন যে অনুব্রতকে যাতে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করানোর সুযোগ দেওয়া হয়। তাঁর যে কোনও মুহূর্তে অক্সিজেনের দরকার হতে পারে।
বিচারক অনুব্রতকে ইনহেলার নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর অনুব্রত বিচারকের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি চেয়ে হাতজোড় করে বলেন, “হুমকি চিঠি কে দিল, তার সিবিআই তদন্ত হোক”। তবে বিচারক বলেন, “এই মামলার সঙ্গে হুমকির কোনও সম্পর্ক নেই। তাই কেউ এ বিষয়ে কথা বলবেন না”।
প্রভাবশালী তত্ত্ব দিয়ে ফের একবার সিবিআই আইনজীবী অনুব্রতর জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আবেদন জানান। জেলে গিয়েই অনুব্রতকে জেরা করার অনুমতি চায় সিবিআই। এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী বলেন, “গরু পাচার মামলার তদন্তে অনেকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। অনুব্রতর নাম বারবার উঠে এসেছে। তাঁকে ছেড়ে দিলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে”। অনুব্রতর আইনজীবী প্রভাবশালী তত্ত্ব খারিজ করে বিচারককে বলেন, “সবাইকে প্রভাবশালী বলার চেষ্টা করে সিবিআই। তাঁকে সিবিআই হেফাজতে নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই”।
অনুব্রতর আইনজীবী বলেন, “আমার মক্কেল গরু পাচারে কোনওভাবে জড়িত নন। পশুহাট থেকে গরু কিনে সীমান্তে গরু পাচার করা হলে আমার মক্কেলের কী দোষ? সীমান্তে গরুপাচার হলে তার দায় বিএসএফের। দায়িত্ব এড়াতে পারে না বিএসএফ। এখনও পর্যন্ত শুধু একজন বিএসএফ কম্যান্ডান্ট গ্রেফতার হয়েছে। আর কেউ নয়। আমার মক্কেল সেফ প্যাসেজ করে দিতেন তার কোনও প্রমাণ নেই। আমার মক্কেলকে টার্গেট করা হচ্ছে। এটা একটা টার্গেটেড ইনভেস্টিগেশন। শুধু সন্দেহের বশে হেফাজতে চেয়েছে সিবিআই”।
এরপর সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, “অনুব্রতর নামে আমরা প্রচুর সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছি। শুধু নিজের নয়, আত্মীয়ের নামে সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তদন্তে এতটুকু সাহায্য করছেন না অনুব্রত। উনি প্রভাবশালী। এটা কোনও টার্গেটেড ইনভেস্টিগেশন নয়। একটাও প্রমাণ দিতে পারবেন যে এটা রাজনৈতিকভাবে করা হচ্ছে? গরু পাচার কোনও ছোটখাট অপরাধ নয়। এনামুল এই চক্রের মাথা। তার থেকে অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল টাকা নিত। সেই টাকা অনুব্রতর কাছে যেত। এটা একটা চেন বিজনেস। অনেক ষড়যন্ত্রকারী রয়েছে”। বেশ কিছুক্ষণ সওয়াল-জবাবের পর আদালত অনুব্রতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।