দেশী ম’দের দিন এবার শেষ, খুব শীঘ্রই একেবারে নতুন রূপে বাজার কাঁপাতে আসছে ‘বাংলা’

বাংলা ম’দকে এবার থেকে আর দেশী বলা যাবে না। পশ্চিমবঙ্গ আবগারি দফতরের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হলেও এতে নতুন রূপ এনে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’র ছোঁয়া। কিছুদিনের মধ্যেই ‘কান্ট্রি লিকার’ হয়ে যাবে ‘ইন্ডিয়া মেড লিকার’। আগামী ১৫ই সেপ্টেম্বর থেকেই এই নতুন নাম নিয়ে হাজির হচ্ছে দেশী ম’দ। ঝাঁঝ বা গন্ধে কোনও ফারাক আসছে না। দেশী ম’দের দোকানের নামও বদলে যাবে। এখন থেকে নাম হবে ‘আইএমএল শপ’।
আবগারি দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি সব জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন এই নামবদল? এই প্রসঙ্গে আবগারি সচিব গৌতম ঘোষ বলেন, “আসলে কান্ট্রি লিকার বলতে আমরা যা বুঝি তার উপাদান মূলত আখ থেকে যে চিনি পাওয়া যায় তা। বলা যেতে পারে ঝোলা গুড়কে পরিশোধিত করে তাতে জল মেশানো হয়। কিন্তু সেটা এখন বদলে গিয়েছে। এখন চালের খুদ, ভুট্টা-সহ নানা শস্যদানা থেকে দেশি ম’দ তৈরি করা হয়। সেটা আগের তুলনায় অনেক বেশি পরিশোধিত। সেই কারণে এটাকে আর কান্ট্রি লিকার বলা চলে না। সেই কারণেই এবার নতুন নামকরণ হচ্ছে”।
গত কয়েক বছরে রাজ্যে দিশি ম’দ নিয়ে আবগারি দফতরে বেশ পরীক্ষানিরীক্ষা করেছে বটে। চোলাই ম’দ থেকে সুরাপ্রেমীদের দূরে রাখতেই ২৩ টাকাতেও ৩০০ মিলিলিটার দিশি ম’দ আনা হয়েছে। মাত্র ১০০ টাকায় রাম, হুইস্কির ৩৭৫ মিলিলিটারের বোতল মিলছে এখন যা তৈরি করেন দেশী ম’দ প্রস্তুতকারকরাই।
তবে সাধারণ রাম, হুইস্কির তুলনায় এই মদের মানগত ফারাক রয়েছে। সস্তার রাম বা হুইস্কিতে ঝাঁজ কম। নতুন ব্র্যান্ডের হুইস্কি এবং রামে অ্যালকোহলের মাত্রা ৫০ ডিগ্রি। আগে কয়েকটি বিলিতি ম’দ প্রস্তুতকারী সংস্থা ৫০ ডিগ্রি অ্যালকোহলের মাত্রার ম’দ বানাত। কিন্তু এখন তাদের সংখ্যা কম। সেই কারণেই দিশি ম’দ প্রস্তুতকারীদেরই বিলিতি তৈরির ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সেই ম’দগুলি ফরেন লিকার হিসাবেই বিক্রি হয়। সেই সঙ্গে বাকি দিশি ম’দের নাম ছিল ‘কান্ট্রি স্পিরিট’। এ বার সেই নামটাই আর ব্যবহার হবে না।
গত কয়েক বছরে রাজ্যে অবশ্য ম’দের চাহিদা বেড়েছে। চলতি বছরের গ্রীষ্মে বিয়ারের চাহিদা এতটাই বেশি ছিল যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হয়েছিল। বাংলা মদের ইতিহাস বাংলায় বেশ দীর্ঘ। এককালে বাংলা মদ কালীমার্কা, তারামার্কা হয়ে উঠেছিল বটে এখন সেখানে বাংলা মাতাচ্ছে দাদা, জোশ, পলাশ, মহুল, বাজিগর ও আরও অনেক নামের কান্ট্রি স্পিরিট। তবে ১৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে এইসব নাম আর থাকবে না। তখন থেকে ব্র্যান্ড নাম যাই হোক না কেন সবই আইএমএল।