রাজ্য

‘রহস্য থাকতে পারে, সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার’, আসানসোলের পদপিষ্ট কাণ্ড নিয়ে হঠাৎ সুর নরম দিলীপের, শাহ্‌’র পাঠের ফল?

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্‌’র (Amit Shah) বঙ্গ সফরের আগে ও তাঁর সফর করে যাওয়ার পর বঙ্গ বিজেপির (Bengal BJP) মধ্যেকার সমীকরণ চোখে পড়ার মতো। আসানসোলে পদপিষ্ট কাণ্ড নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। কিন্তু এবার অমিত শাহ বঙ্গ সফর করে যাওয়ার পরই দিলীপের সুরে এল নরম ভাব। আচরণেও এসেছে বদল।  

গত শুক্রবার রাতে যখন অমিত শাহ কলকাতা আসেন, তখন বিমানবন্দর থেকেই তাঁর গাড়িতে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ও রাজ্যের বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেখানে তাৎপর্যপূর্ণভাবে দেখা যায় নি দিলীপ ঘোষকে। এর আগে শুভেন্দুর কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠান নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করলেও, শাহী সফরের পর সেই দিলীপ ঘোষকেই সুর নরম করে বলতে শোনা গেল, “এতো জায়গায় কম্বল দেওয়া হয়। কিছু ঘটেনা। এখানে হল। রহস্য থাকতে পারে। অনেকে চিৎকার করছেন। তদন্ত করে দেখা উচিত”।

উল্লেখ্য গত বুধবার আসানসোলের শিবসেবা অনুষ্ঠানে কম্বল বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে তিনি প্রথমে কয়েকজনের হাতে কম্বল তুলে দেন। এরপর তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। পদপিষ্ট হয়ে এক শিশু-সহ তিন জনের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে।

এই ঘটনা নিয়ে শুভেন্দুকে খানিকটা কটাক্ষই করেন পড়েন দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য ছিল, “দান খয়রাতি মানবতার অপমান। কিছু পাওয়ার লোভ দেখিয়ে মানুষকে টেনে আনা আমি সমর্থন করি না। গরীবকে সাহায্য করার অন্য নানারকম উপায় আছে। আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল”।

এরপরই জল্পনা তৈরি হয় যে তাহলে কী বঙ্গ বিজেপির মধ্যেকার দ্বন্দ্ব ক্রমেই এবার প্রকাশ পেতে শুরু করেছে? দিলীপ কেন শুভেন্দুর বিপক্ষে কথা বলছেন? সেই নিয়ে অবশ্য মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, “আপনারা(মিডিয়া) আপনাদের প্রয়োজন মতো এই তরজা বাড়ান কমান। আমরা একই পার্টি। একই আদর্শ। নিজের কথা যে যার নিজের মতো বলেন”।

বলে রাখি, সেদিন রাতেই কলকাতায় আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাতে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বিজেপির রাজ্য সদর দফতরে বৈঠক করেন তিনি। দলের পরিস্থিতি নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে, তা দিলীপই পরেরদিন সাংবাদিকদের জানান। এরপরই আসানসোলের কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠান নিয়ে একেবারেই ভিন্ন মত শোনা গেল দিলীপের গলায়। তিনি বলেন, “এত জায়গায় কম্বল বিতরণ করা হয়, কোথাও তো কিছু হয় না। এটা তদন্ত করে দেখা উচিত”।

কিন্তু হঠাৎ কেন অন্য সুর দিলীপ ঘোষের গলায়? ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এসবই অমিত শাহ্‌’র বৈঠকের ফল। সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের নিচুতলার নেতাদেরই শুধু নয়, বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতাদেরও শাহ নির্দেশ দিয়েছেন যাতে কোনও অন্তর্দ্বন্দ্ব না থাকে। সেই কারণেই দিলীপের সুর নরম হয়েছে বলে অনুমান।

Back to top button
%d bloggers like this: