রাজ্য

মৃত রোগীর হাতে স্যালাইন লাগিয়ে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর, ভয়াবহ অভিযোগ উঠল সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে

ভয়ানক কাণ্ড। মৃত রোগীর হাতেই স্যালাইন লাগিয়ে তাকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হল। এমনই এক ভয়াবহ অভিযোগ উঠল রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। রোগীর পরিবারের দাবী, ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ার কারণে রোগীর মৃত্যু হয়। নিজেদের গাফিলতি ঢাকতেই ফের স্যালাইন লাগিয়ে অন্য হাসপাতালে রেফার করেছেন চিকিৎসকরা। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হবিবপুর মোদিপুকুর হাসপাতালে।

কী ঘটেছে ঘটনাটি?

হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃত ওই রোগীর নাম অনিমা বর্মণ। তাঁর স্বামী পরিতোষ বর্মণ। বামনগোলার মোদিপুকুর এলাকার বাসিন্দা তারা। জানা গিয়েছে, অনিমা গত ২-৩ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। গতকাল, সোমবার সন্ধ্যের দিকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হবিবপুর মোদিপুকুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

তাঁর পরিবারের লোকজন জানান, এমন কোনও আশঙ্কাজনক অবস্থা ছিল না অনিমার। মাথা ব্যাথা ছিল। এছাড়া আর কোনও সমস্যা ছিল না। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক অনিমাকে একটি ইঞ্জেকশন দেন। পরিবারের দাবী, এরপরই মৃত্যু হয় অনিমার কারণ এরপর থেকেই তাঁর শরীর কোনও সাড়া দিচ্ছিল না।

অনিমার পরিবারের কথায়, এই সময় চিকিৎসকরা অনিমাকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন। হাতে স্যালাইনও লাগিয়ে দেন। কিন্তু সেখানে নিয়ে যেতেই চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, হাসপাতালে আনার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রোগীর পরিবারের সদস্যরা তখন মোদিপুকুর হাসপাতালে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।

মৃতের স্বামী পরিতোষ বর্মন বলেন, “জ্বর থাকার জন্য স্থানীয় মুদিপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে স্ত্রীকে ভর্তি করায়। সে সময় চিকিৎসক ইনজেকশন দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে অনিমা অজ্ঞান হয়ে পড়েন । তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক হাতে স্যালাইন লাগিয়ে রোগীকে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন”।

পরিতোষ আরও জানান, “রোগীর হাতে ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্যই মৃত্যু হয়েছে। এমনকী নিজেদের গাফিলতি ঢাকতে মৃত রোগীর হাতে স্যালাইন লাগিয়ে রেফার করা হয়েছিল। ভালো তো করতে হাসপাতালে নিয়ে গেছিলাম। ভালো তো করতে পারলামই না, উল্টে চলে গেল আমাকে ছেড়ে”।

এই অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতালের বিএমওএইচ সুদীপ কুণ্ডু বলেন, “রোগীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সোমবার হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর চিকিৎসাও শুরু করেছিলেন। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। পথে রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। রোগীর পরিবারের অভিযোগ ভিত্তিহীন”।

Back to top button
%d bloggers like this: