রাজ্য

সাম্প্রদায়িকতার সম্প্রীতি! মন্দিরে পুজো দিয়ে মহরম পালন করেন মুসলিমরা, লাঠি খেলায় মাতেন হিন্দুরাও, অদ্ভুত রীতি জলপাইগুড়ির এই গ্রামে

এক অন্য মহরমই বটে। এই মহরমে ধর্মের কোনও গণ্ডি নেই। এই মহরমে লাঠি খেলার আগে মুসলিমরা মন্দিরে পুজো দেন। আর লাঠি খেলার সময় তাতে যোগ দেন হিন্দুরাও। অনেক বছর ধরে এমনই রীতি চলে আসছে এই গ্রামে। সম্প্রীতির এক অনন্য নজির তৈরি করেছে জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর কারবালা গ্রামের এই মাঠ।  

জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর গ্রামপঞ্চায়েতের এই মাঠকে মহরমের মাঠ বলেই চেনেন সবাই। কথিত আছে আজ থেকে বহু বছর আগে এক পরিবার এই জমিতেই গ্রাম ঠাকুরের মন্দির নির্মাণ করেছিল। তারপর জমিটি মন্দির কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়। এদিকে, এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের মহরমে খেলার কোনও মাঠ ছিল না। শোনা যায়, তাঁরা নাকি তখন সেই মন্দির কমিটির কাছে জমি ব্যবহার করার অনুমতি চায়। অনুমতি দেয় মন্দির কমিটি।

সেখান থেকে অনুমতি পাওয়ার পর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য মহরমের দিন গ্রাম ঠাকুরের পুজো দিয়ে মহরমে লাঠি লেখা শুরু করেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। সেই দিনেও স্থানীয় হিন্দুরাও এই লাঠি খেলায় সামিল হয়েছিলেন। সেই থেকে এই রেওয়াজ আজও চলে আসছে।

গত শনিবার ছিল মহরম। পরম্পরা মেনেই গ্রাম ঠাকুরের পুজো দেন হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। এরপর সন্ধ্যায় নীরবতা পালন করেন তাঁরা। তারপর দুই সম্প্রদায় মিলে শুরু হয় লাঠি খেলা। শনিবার কারবালা ময়দানে উপস্থিত হয়েছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা প্রাক্তন প্রধান কৃষ্ণ দাস। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বিমলা ছেত্রী রায় ও জেলাপরিষদের নব নির্বাচিত সদস্য প্রণয়িতা দাসও উপস্থিত ছিলেন এদিন। ১৪টি দল লাঠিখেলায় অংশগ্রহণ করেছিল।

এই বিষয়ে মন্দিরের সেবাইত হরেন পাল বলেন, “আমদের এখানে হিন্দু মুসলিম নিয়ে কোনও ভেদাভেদ নেই। আমরা এখানে সকলে মিলেমিশে থাকি। এই গ্রামে যে কোনও সম্প্রদায়ের মানুষেরা বিয়ে,অন্নপ্রাশন যাই হোকনা কেন সেই উপলক্ষে এই মন্দিরে পুজো দেন। মহরম উপলক্ষেও জাতিধর্ম নির্বিশেষে এখানে পুজো দেন স্থানীয়রা”।

Back to top button
%d bloggers like this: