হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব তিথিতে মতুয়াদের উদ্দেশে বাংলায় ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী, গর্জে উঠলেন রাজনৈতিক হিংসা, দুর্নীতি নিয়ে

হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব তিথি উপলক্ষ্যে বনগাঁর ঠাকুরবাড়িতে আয়োজিত হয়েছে বারুণী মেলা। এই মেলায় গতকাল, মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারচুয়ালি বক্তব্য রাখেন। এদিন নিজের বক্তব্যে রাজনৈতিক হিংসা, জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে সরব হন মোদী। রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে আক্রমণ মোকাবিলার প্রসঙ্গও তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন প্রথমেই বাংলায় নিজের ভাষণ শুরু করেন নরেন্দ্র মোদী। এদিন প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন যে গত বছর তিনি ভোটের সময় মতুয়াধাম বাংলাদেশের ওড়াকান্দিতে গিয়েছিলেন। দাবী করেন, মতুয়া ঠাকুরবাড়ি তাঁকে সবসময়ই ভালোবাসা দিয়েছে। এক দেশের ভাবনা বাস্তবায়ণে শ্রী হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের দর্শন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপরই তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে জাতিভেদ প্রথার প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “সমাজ ভাগ করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা যখন স্বার্থের জন্য খুন, ভাষা ও জাতের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করার চেষ্টা হতে দেখি, তখন হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবন, তাঁর দর্শন গুরুত্বপূর্ণ”। শুধু তাই-ই নয়, এদিন নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে মতুয়াদের মূল্যবোধের প্রশংসাও করেন মোদী।
এদিন নিজের এই বক্তব্যে দুর্নীতি মুক্ত সমাজের পক্ষে সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “আপনাদের কাছে আর্জি সমাজ থেকে দুর্নীতিকে দূর করার জন্য সমাজ স্তরে আমাদের সকলকে আরও অনেক সজাগ থাকতে হবে। যদি কখনও কোথাও অন্যায় হতে দেখেন, তাহলে অবশ্যই সোচ্চার হন, প্রতিবাদ করুন। এটা আমাদের সমাজের প্রতি, আমাদের রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের কর্তব্য। রাজনৈতিক গতিবিধিতে অংশ নেওয়া আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে যদি হিংসার মাধ্যমে কাউকে ভয় দেখিয়ে কেউ আটকানোর চেষ্টা করে, তাহলে সেটা অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করার সমান। এর বিরুদ্ধে গর্জে প্রতিবাদী হতে হবে”।
Delighted to address Matua Dharma Maha Mela 2022 on the Jayanti of Sri Sri Harichand Thakur Ji. https://t.co/UrxHjlMh8L
— Narendra Modi (@narendramodi) March 29, 2022
বাংলায় এমনিতেই নানান ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। প্রথমে জোড়া কাউন্সিলর খুন, এরপর তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখের খুন ও এরপর বগটুইয়ের গণহত্যাকাণ্ড, সব মিলিয়ে বঙ্গ রাজনীতি এখন উত্তপ্ত। এমন আবহে সমাজের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর এমন গর্জে ওঠা যে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ, তা বলাই বাহুল্য।