রাজ্য

‘অভিষেকের জন্মবৃত্তান্ত বললে কেউ আর ওকে ভোট দেবে না’, বিস্ফোরক মন্তব্য মমতার একসময়ের ছায়াসঙ্গিনী সোনালি গুহ’র

তৃণমূলের জন্মের গোড়া থেকেই তিনি দলের সঙ্গে ছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক পটভূমিতে সোনালি গুহ নামটাও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মমতার ছায়াসঙ্গী বলা হত তাঁকে। তৃণমূল তৈরি হওয়ার শুরুর থেকেই ‘দিদি’র সঙ্গে ছিলেন সোনালি। তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ঘটে ছন্দপতন। সোনালিকে টিকিট দেওয়া হয়নি। আর এর জেরে অভিমান করে রাতারাতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।

তব বিজেপিতে যোগ দিয়েও সেভাবে ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে নি তাঁর। সেভাবে রাজনীতিতে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি তাঁকে। বেশ কিছু মাস পর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য ক্ষমা চেয়ে মমতাকে চিঠি সেন সোনালি। কিন্তু লাভের লাভ হয়নি। তৃণমূলের তরফে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি সোনালির সঙ্গে। ফলে রাজনীতি থেকে দূরেই সরে গিয়েছিলেন তিনি।

সেই সোনালি গুহই এবার নিজের প্রিয় ‘দিদি’ ও তাঁর ভাইপোকে নিয়ে একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন। এক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সোনালি। তিনি যেহেতু তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলের সঙ্গে রয়েছেন ও মমতার ছায়াসঙ্গিনী হওয়ার সুবাদে তাঁর কাছে দলের অন্দরের এমন অনেক তথ্যই রয়েছে, যা আর পাঁচজনের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। এবার তেমনই এক ইঙ্গিত দিলেন সোনালি।

ওই সাক্ষাৎকারে সোনালি বলেন, অভিষেক ধীরে ধীরে দলের সমস্ত পুরনো নেতাদের বেশ সুকৌশলে ছাঁটাই করছেন। তিনি নিজেও সেই তালিকায় ছিলেন। তাঁর কথায়, তাঁকে অভিষেক ছাঁটাই করার আগে তিনি নিজেই দল থেকে বেরিয়ে এসেছেন। তিনি এও বলেন, তিনি ও দলের বর্ষীয়ান নেতারা দায়িত্ব নিয়ে অভিষেককে ভোটে জিতিয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে তাদেরই দল থেকে ধীরে ধীরে বের করতে থাকেন অভিষেক।

এরপরই বিস্ফোরক মন্তব্য করে সোনালি বলেন, ‘এখন যদি অভিষেকের জন্মবৃত্তান্ত বলি, তাহলে আর কেউ ওকে ভোট দেবে না। কোনও মানুষ আর ওকে মাথায় তুলবে না’। সোনালির এহেন মন্তব্যের পরই রাজ্য-রাজনীতিতে তুমুল শোরগোল শুরু হয়েছে। সকলের একটাই প্রশ্ন, কী এমন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে অভিষেকের জন্মের পিছনে, যা তৃণমূলকে বড় ধাক্কা দিতে পারে?

শুধু তাই-ই নয়, তিনি এও বলেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনওভাবেই চান না যে দলের কেউ তাঁর থেকে ভোটে এগিয়ে থাকুন। তিনি জানান, ২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে সুব্রত বক্সি মমতার থেকে বেশি ভোটে জিতেছিলেন বলে মমতা সুব্রত বক্সির উপরেও বেশ মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সোনালির কাচে তৃণমূলের এমন অনেক তথ্যই রয়েছে, যা বলে দিলে তৃণমূলের ভাঙন নিশ্চিত। সেসব তথ্য তিনি ধীরে ধীরে ফাঁস করেন কী না, এখন সেটাই দেখার।

এবার ফের সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরতে চান সোনালি। এতদিন অপেক্ষা করেছেন তৃণমূলের জন্য, কিন্তু এবার আর না। বিজেপিতেই ফিরতে চান তিনি, এমনটাই জানিয়ে সোনালি বলেন, “দিদি ডাকলেও আর তৃণমূলে ফিরব না”। সূত্রের খবর, বিজেপিতে ফেরার জন্য ইতিমধ্যেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে কথা বলেছেন সোনালি।

Back to top button
%d bloggers like this: