নিজের দিদিকেই খু’ন করার অভিযোগ উঠল এবার ‘কালীঘাটের কাকু’র বিরুদ্ধে, বিস্ফোরক দাবী করলেন খোদ ভাগ্নিই

নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়েছে তদন্তকারীদের তরফে। বেহালায় দীর্ঘদিন ধরে নিজের ক্ষমতার আস্ফালন দেখিয়েছেন তিনি, এমনটাই অভিযোগ। তাঁর আয়ের উৎস নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এবার কালীঘাটের কাকুর বিরুদ্ধে উঠল খু’নের অভিযোগও।
২০১৭ সালে ২৬ আগস্ট বেহালার ফকিরপাড়া রোডে এক বৃদ্ধা খু’ন হয়েছিলেন। সেই বৃদ্ধার মেয়েই বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন। তিনি নিজেকে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের ভাগ্নি বলে দাবী করেছেন। আর তিনিই সুজয়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন।
ওই মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর সন্দেহ তাঁর মায়ের খু’নের পিছনে তাঁর মামা অর্থাৎ সুজয়কৃষ্ণের হাত রয়েছে। ষড়যন্ত্র করে খু’ন করা হয়েছে তাঁর মাকে। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, খু’নের পর নিজের প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখিয়ে কালীঘাটের কাকু তাঁর বাড়ি তালাবন্ধ করে রেখেছেন। তিনি নিজেই নিজের বাড়িতে ঢুকতে পারে না।
এক সংবাদমাধ্যমে ওই মহিলা বলেন, “ফকিরপাড়া রোডের বাড়িতে একতলাতে আমার মা থাকতেন। আমার বাবা আগেই মারা গিয়েছেন। মা একতলায় একাই থাকতেন। দোতলায় আমি, আমার স্বামী, সন্তানকে নিয়ে থাকতাম। ২০১৭ সালের ২৬ অগস্ট সকালে বেল বাজে বাড়ির। আমরা ভাবি মা নিজে খুলবে। কিন্তু, কেউ দরজা না খোলায় বারাবার বেল বাজতে থাকে। তখন নিজে গিয়ে দেখি মা ওঠেনি তখনও। মাকে ডাকাডাকি করে না পেয়ে এক প্রতিবেশীর সাহায্যে দরজা ভাঙার চেষ্টা করি। দরজা ভেঙে দেখা যায় আমার মা নীচে মেঝেতে পড়ে আছে। মুখ দিয়ে, নাক দিয়ে রক্ত ঝরছে। গলায় দড়ি জড়ানো রয়েছে। আমি ওই জিনিস দেখে ওখানেই অজ্ঞান হয়ে যাই”।
তাঁর আরও দাবী, “সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে আমার মা সান্টু বলে ডাকতেন। আমার মা আমাকে বলেছিলেন, সান্টু কিছু করবে। ওর কিছু দরকার আছে। তাই বাড়ির বিষয়ে একটা সই চাইছিলেন। বাড়িটা আমার বাবার নামে রয়েছে। আমি তখন স্পষ্ট জানিয়েছিলাম আমি সই করব না। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের সঙ্গে আমার সম্পর্ক কোনোদিনই মধুর ছিল না। ও তো প্রোমোটার। তাই হয়তো বাড়িরটাকে নিয়ে কিছু করতে চাইছিল। আমি যতদূর জানি ফকিরপাড়ার ওই শুরু ওই শেষ। ওর তো অনেক পাওয়ার। এদিকে আমার মায়ের দেহ উদ্ধারের পর আমাকে ও আমার স্বামীকে অভিযুক্ত করা হয়। সন্দেহ করা হয় সম্পত্তির জন্য মাকে খুন করেছি। এদিকে ওই সম্পত্তি অলরেডি আমারই। কিন্তু, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের ওই বাড়িটা দরকার ছিল। আজও বোধহয় দরকার আছে”।
ওই মহিলা জানান, ওই ঘটনার পর তাদের বাড়ি যাতে কেউ ভাড়া নে নেন, বা কেউ না কেনেন, তার জন্য পাড়ায় পোস্টারও দিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। মহিলার কথায়, “গোটা পাড়াতে উনি পোস্টার দিয়ে বলেছিলেন এই বাড়িটা যেন কেউ না কেনে, যেন না ভাড়া দেওয়া হয়। আমার বাড়ির দরজাতেও লাগানো হয়েছিল। পাড়ার লোকও ওনার ভয়ে চলে”।
এই ঘটনা নিয়ে ওই মহিলা পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও তুলেছেন। তাঁর কথায়, “পুলিশ তো শাসকদলের। আর সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র কে”।