অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার সুপারিশ, ‘গোটা মন্ত্রিসভার গ্রেফতার চাই’, দাবী শুভেন্দুর, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের জেরে উত্তাল বিধানসভা

অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার মামলা নিয়ে এবার বিধানসভা(West Bengal Assembly) তোলপাড়। আজ, সোমবার এই ইস্যু নিয়ে বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা (BJP MLA)। বিধানসভা মুলতুবির প্রস্তাব আনেন তারা। যদিও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee) সেই আবেদন খারিজ করে দেন। এরপরই বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। সাংবাদিকদের সামনে গোটা মন্ত্রিসভার (cabinet) গ্রেফতারির দাবী তোলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
এদিন শুভেন্দু প্রশ্ন তোলেন, “এই ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্তের জন্য, যেটা হাইকোর্ট চেপে ধরেছে, এই অযোগ্যদের নিয়োগের সুপারিশ কারা করল? এর পিছনে কে”? তিনি অভিযোগ করেন, “এটা তো পরিষ্কার, মাননীয়ার নেতৃত্বে মুখ্যসচিবের উপস্থিতিতে এটা হয়েছে। পুরো ক্যাবিনেটের জেল চাই। আমরা পুরো ক্যাবিনেটের গ্রেফতার চাই এই ইস্যুতে”।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার মামলায় শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনের সওয়াল জবাবের সময়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কড়া ভর্ৎসনা করেন। এদিন মণীশ জৈন আদালতে সরাসরি জানান যে এই শূন্যপদ তৈরি করার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার। মন্ত্রিসভার বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “রাজ্য কেন বেআইনিভাবে নিযুক্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছে? গণতন্ত্র কি আদৌ সঠিক লোকের হাতে রয়েছে? সন্দেহ রয়েছে”।
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাংবাদিক বৈঠক জানিয়েছিলেন যে এসএসসি-তে যাঁরা বেআইনিভাবে বা যারা মেধা তালিকার ক্রম ভেঙে চাকরি পেয়েছেন, তাদের কারোর চাকরি যাওয়ার পক্ষে নয় সরকার। কারণ এতে তাঁদের পরিবারের উপর বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। সেই কারণে পাঁচ হাজারের সামান্য বেশি সুপার নিউমেরি শূন্য পদ তৈরি করা হয়েছে। তবে গোটা বিষয়টাই আদালতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে বলেও জানান তিনি। আদালত যদি বলে এদের সবাইকে বরখাস্ত করতে হবে, তা হলে সরকার তা মেনে নেবে, এমনটাই জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
কিন্তু তা সত্ত্বেও, অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রস্তাব দেওয়া হয়। এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “অযোগ্যদের চাকরি বাঁচাতে কীভাবে ক্যাবিনেট এরকম সিদ্ধান্ত নিতে পারে”?
বিচারপতির উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণ, “ক্যাবিনেটে বলতে হবে অযোগ্যদের পাশে নেই। এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে এমন পদক্ষেপ করব, যা গোটা দেশে হয়নি। আমি ক্যাবিনেটকে পার্টি করে দিতে পারি। সবাইকে এসে উত্তর দিতে হবে। ক্যাবিনেট সদস্যদের শোকজ করতে পারি”।
হাইকোর্টের এই সংক্রান্ত নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। যদিও এরপরও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে তিনি নিজের পর্যবেক্ষণ বদলাচ্ছেন না। আদালতের এই সওয়াল-জবাবেরই আঁচ পড়ে বিধানসভাতে। এদিন শুরুর থেকেই এই বিষয়ে সরব হন বিজেপি বিধায়করা।