‘KFC-ও তো চপ বিক্রি করে, তাতে তো সমালোচনা হয় না’, গর্জে উঠলেন চপশিল্প গবেষণায় সাহায্যকারী রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক

গতকাল থেকেই একটি বিষয় নিয়ে বেশ চর্চা হচ্ছে। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী কণা সরকার চপশিল্প নিয়ে ভূগোলের স্নাতকোত্তরের চতুর্থ সেমিস্টারের জন্য একটি গবেষণাপত্র তৈরি করেছেন। তাঁর সেই গবেষণা পত্র নিয়ে গোটা রাজ্যে এখন শোরগোল বলা যেতে পারে। এই নিয়ে অনেকেই ট্রোল করেছেন ওই পড়ুয়াকে। এবার এই নিয়ে মুখ খুললেন এই গবেষণাপত্রের যার অবদান রয়েছে কণার সেই গাইড তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ তাপস পাল।
তাপস পাল জানান যে এই বিষয়টি তাঁরই মস্তিস্কপ্রসূত। তিনি বলেন, “কণাকে অনেকে কটাক্ষ করছে। প্রথমেই বলি ও একজন নিষ্পাপ পড়ুয়া। আমিই ওকে এই বিষয়ে গবেষণার কথা বলি। চপ বিক্রির মধ্য দিয়ে একটি পরিবার, সমাজের কি কোনও উন্নতি হয় না হয় না? এই নিয়েই ছিল গবেষণা। চপ বিক্রির ক্ষেত্রে মহিলারা কটা যুক্ত, এতে সাধারণ মানুষের কতটা লাভ হয় তাও ছিল দেখার বিষয়। এই গবেষণা হয়েছে মালদার গাজল ১, ২ এবং করকোচ গ্রামে”।
তাপস পাল জানান, “এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে চপ বিক্রি করে মহিলাদের গড় আয় মাসিক নয় হাজার টাকা। পুরুষদের ক্ষেত্রে আয় সামান্য বেশি। তা নয় থেকে ১৫ হাজার টাকা বা তার থেকে সামান্য বেশি”। এই প্রসঙ্গে ২০১৮ সালের এক গবেষকের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “দেশে ৮৩ শতাংশ আন অর্গানাইজড ইকোনমিক সেক্টর এবং ১৭ শতাংশ অর্গানাইড ইকনোমিক সেক্টর। আমার আগে সেলুন, ঠেলাওয়ালাদের উপরেও গবেষণা হয়েছে। এই প্রথম প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে গবেষণা হচ্ছে না”।
এই বিষয়ে ওই অধ্যাপক আরও বলেন, “ফুড ইন্ডাস্টি তো রয়েইছে। KFC যা বিক্রি করে সেটাও চপ। সেটা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে না। তাহলে প্রান্তিক এলাকায় যাঁরা চপ বিক্রি করছেন তাঁদের নিয়ে গবেষণা করলেই কেন সমালোচনা হচ্ছে। আমি একজন শিক্ষক এটা নিয়েই আমার গবেষণার”।
অধ্যাপকের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা কথাটি লেখা হয়নি গবেষণাপত্রটিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কপি জমা দেওয়া হয়েছে সেখানে একথা লেখা হয়নি। পার্সোনাল কপিতে যা কিছু লেখা হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু এখন আমাদের আচার্য সেটাও মনে রাখতে হবে”।
অন্যদিকে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, বাণিজ্য ও আইন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক দীপক কুমার রায় এই বলেন যে এই বিষয়টি সম্পর্কে তিনি আগে জানতেন না। ভাইরাল হওয়া শিরোনামের সঙ্গে গবেষণাপত্রের কোনও মিল রয়েছে কী না, তা আগে ভালোভাবে জানতে হবে।