কাটমানি পান নি, তাই মহিলার ঘরে ঢুকে হুমকি, গালিগালাজ তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের স্বামীর, ভিডিও ঘিরে বিতর্ক

সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে রিষড়ার পুরসভা মণ্ডলীর সদস্য জাহিদ হাসান খানের গুলি ছোঁড়ার ভিডিও। এবার ফের একবার রিষড়ার এক কো-অর্ডিনেটরের এক চাঞ্চল্যকর ভিডিও সামনে এল। এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রিষড়া পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর তথা আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের স্বামী সাকির আলি এক মহিলার ঘরে ঢুকে তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন, গালিগালাজ করছেন। ঘর থেকে তাকে বের করে দিচ্ছেন বলেও দেখা যায়।
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি আসলে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের। তবে এই ভিডিও এখন বেশ ভাইরাল। ইতিমধ্যেই সাকির আলির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এদিকে, সাকির আলির পাল্টা দাবী, ওই বাড়িতে মধুচক্রের আসর চলছিল। তিনি সেটা বন্ধ করতেই সেখানে গিয়েছিলেন।
যার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে, সেই নাসিম আখতার আনসারি শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন যে এই ভিডিওটি সত্যি। তিনি জানান যে তিনি রিষড়ার বাঘখাল উর্দু প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। ২০২১ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর ঘটনা এটি। তিনি ২০২০ সালে এই বাড়িটি কেনেন। তাঁর অভিযোগ, তাঁর পরিবার যখন ওই বাড়িতে ছিলেন, তখন সাকির আলি এসে তাদের বের করে দিয়ে বাড়িতে তালা দিয়ে দেয়।
তিনি বলেন যে তিনি স্কুল করার জন্য এই বাড়িটি কিনেছিলেন। সাকির আলি তোলা হিসেবে দেড় লক্ষ টাকা নেয় তাঁর থেকে। এরপরও ১০ লক্ষ টাকা দাবী করেন বলে দাবী নাসিমের। সেই টাকা তিনি না দেওয়ায় মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে। নাসিমীর দাবী, সাকিরের স্ত্রী সাংসদ, তাই তিনি প্রভাব খাটিয়ে এইসব করছেন। নাসিমের পরিবারের অভিযোগ তাদের অনেক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। তারা এখন ভয়ে ভয়ে থাকেন যে হয়ত যে কোনও সময় তাদের উপর আক্রমণ করা হবে।
এই ঘটনায় সাকির আলির পাল্টা অভিযোগ, ওই শিক্ষক ওই বাড়িটি জোর করে দখল করেছিলেন। এক দরিদ্র মহিলাকে উচ্ছেদ করে বাড়ি দখল করে মধুচক্র চালানো হচ্ছিল বলে দাবী করেন তিনি। এই খবর পেয়ে তাঁদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন তিনি, এমনই দাবী সাকির আলি।
তাঁর অভিযোগ, ওই শিক্ষক ও তাঁর পরিবার মিথ্যা কথা বলছে। তাঁর কথায়, একজন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকের এত প্রতিপত্তি কী করে হয় যে একটা স্কুলের মালিক হয়ে যায়? আসলে ঘটনাটি ঠিক কী, তা জানতে সিআইডি তদন্তের দাবী করেন সাংসদের স্বামী।
এদিকে, বাড়ি মালিক আরিফা খাতুনের দাবী করেছেন যে নাসিম আখতার যে বাড়ি কিনেছে বলে দাবী করছে, তা আসলে মিথ্যা। কারণ ওই বাড়িটি আসলে তাঁর প্রথম পক্ষের স্বামীর। শিক্ষক তাঁকে জোর করে তাড়িয়ে দিয়ে বাড়িটার দখল নিতে চেয়েছিলেন। এই নিয়ে অনেক মামলা হয়েছে বলেও জানান আরিফা। ক্রমাগত অশান্তি হচ্ছিল বলেই তিনি সাকিরকে ডেকে এনেছিলেন বলে দাবী করেন আরিফা।