রাজ্য

একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে ঝাঁঝালো বক্তৃতা, বাজিমাত করল অভিষেকের জেলার মেয়ে, কে এই তৃণমূলের নতুন মুখ? কী পরিচিতি তাঁর?

একুশে জুলাই তৃণমূলের কাছে এক আবেগ বলা যেতেই পারে। আর সেই মঞ্চে বক্তৃতা দেওয়ার স্বপ্ন থাকে অনেক তরুণ প্রজন্মেরই। এই বছর একুশের মঞ্চে দেখা গেল এক নতুন মুখ যাকে নিয়ে এখন রাজনীতির অন্দরে বেশ চর্চা বেড়েছে। এবারের একুশের মঞ্চে সকলের নজর কাড়লেন তৃণমূলের নতুন মুখ রাজন্যা হালদার।

একুশের মঞ্চে কারা কারা বক্তব্য রাখবেন, তা স্থির করেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজন্যার ক্ষেত্রেও তাই-ই হয়েছিল। একুশের জুলাইয়ের মঞ্চে বক্তাদের মধ্যে রাজন্যার নাম যোগ করেছিলেন খোদ মমতাই। আর তাঁর সেই সিলেকশনই বাজিমাত করল মঞ্চে। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ পেয়ে স্বভাবতই বেশ উৎসাহী ছিলেন রাজন্যাও।

কিন্তু কে এই রাজন্যা হালদার?

রাজন্যা হালদার হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি করা ‘জয়ী’ ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য। কয়েকমাস আগেই ধর্মতলায় শহিদ মিনারের পাদদেশে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে দু’দিনের ধর্না চলাকালীন তৃণমূল ছাত্র-যুবদের গান শুনে এই ব্যান্ডটি তৈরি করে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। চার-পাঁচজনের গানের দলকে অনেক বাদ্যযন্ত্রও সরবরাহ করেছিলেন মমতা। সেই ব্যান্ডের সদস্যই হলেন রাজন্যা।

দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার সোনারপুরের মেয়ে রাজন্যা। একজন পিএইচডি স্কলার তিনি। প্রেসিডেন্সি থেকে স্নাতক পাশ করেছেন। ছোটো থেকেই রাজনৈতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন রাজন্যা। দাদু কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আর তাঁর বাবাও কংগ্রেস করতেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১৭ সাল থেকে সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেছেন রাজন্যা। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ছাত্র যুব সংগঠনের সহ সভাপতি।

নিজের বক্তৃতায় কী বলেছিলেন রাজন্যা?

একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে বক্তৃতা দিতে উঠেই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ছাতা’, ‘বটগাছ’, ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যুব প্রজন্মের ‘নয়নের মণি’ বলে সম্বোধন করেন রাজন্যা। সকলকে শ্রদ্ধা জানিয়ে দিল্লি দখলের বার্তা শুরু করেন তিনি।

রাজন্যার কথায়, “৩০ বসন্ত পেরিয়ে আজ আমি স্বপ্ন দেখি, ধর্মতলায় নয়, ২০২৪-এ লালকেল্লার বুকে হবে ২১ জুলাই পালন হবে”। বিরোধীদের আক্রমণ শানিয়ে রাজন্যা বলেন, “তোমাদের কাছে সিবিআই আছে, ইডি আছে, আমাদের কাছে দিদি আছেন”।

নিজের বক্তৃতায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রসঙ্গ টেনে আনেন রাজন্যা। বলেন, “কয়েক দশক আগে এক বাঙালি আমাদের বলেছিলেন দিল্লি চলো, আফশোষ হয়, সেদিন আমরা যেতে পারিনি। আজ ফের এক বাঙালি ডাক দিয়েছেন ইউনাইটেড ইন্ডিয়া হয়ে দিল্লি চলো। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই থাকব”।অনেকের মতেই, ভবিষ্যতে যুব তৃণমূলের মুখ হতে চলেছে রাজন্যা।

রাজন্যার কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে আমাদের মতো নতুনকে জায়গা করে দিচ্ছেন, আমাদের কাছে এটা বড় সৌভাগ্য”। শুক্রবারের পর থেকেই রাজন্যাকে নিয়ে বেশ চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূল সূত্রে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ পছন্দ করেন রাজন্যাকে। তাঁর মতোই ঝাঁঝালো বক্তৃতা রাখার ক্ষমতা রাখেন রাজন্যা। ফলে রাজন্যা তৃণমূলে এবার কতটা গুরুত্ব পান, এবার সেটাই দেখার।

Back to top button
%d bloggers like this: