যত গড়বড় গুড়ে! পাটালি ভেবে কীসে কামড় বসাচ্ছেন, পিঠেই বা হচ্ছে কোন গুড়ে? না জেনে বিষ খাচ্ছেন না তো?

চলছে শীতের মরশুম। শীত মানেই মিষ্টিপ্রিয় বাঙালির কাছে নলেন গুড় বা নলেন গুড় দিয়ে বানান নানান মিষ্টি, পিঠেপুলি, পায়েস ইত্যাদি। শীতের মিঠে রোদ গায়ে মেখে নতুন গুড়ের স্বাদ নেওয়া যে কী অমৃত ব্যাপার, তা খাঁটি বাঙালি ছাড়া কেউ বুঝবে না।
শীতকালে চারদিকে কুয়াশার সঙ্গে সঙ্গে যেন বাতাসে নলেন গুড়ের গন্ধও মো মো করে। এই সময় খাবারের কোনও ঠিক-ঠিকানা আছে নাকি! শীতকাল মানেই পেটপুজো। সেই নলেন গুড়ের রসগোল্লাই হোক বা নলেন গুড়ের পায়েস বা পিঠে, সবই এক্কেবারে একশোয় একশো। অনেকে তো আবার পাটালি দিয়ে রুটি খেতেও দারুণ ভালোবাসেন। কিন্তু এই যে নলেন গুড়ের পাটালি খাচ্ছেন, সেটা আদৌ গুড় তো?
গুড়ের সঙ্গে বাঙালির আবেগ জড়িয়ে। কিন্তু যে গুড় আমরা খাচ্ছি, তা আসলে কতটা খাঁটি আর কতটা ভেজাল, সে হদিশ আমরা পাই না। খেজুর গাছে হাঁড়ি বেঁধে তাতে রস সংগ্রহ করে তা জাল দিয়ে গুড় তৈরি করার প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ। সেই সঠিক প্রক্রিয়ায় গুড় তৈরি হয়েই আপনার দোরগোড়ায় পৌঁছাচ্ছে তো?
হয়ত না। দ্রুত গুড় সরবরাহ করতে আর অতটা সময় লাগাচ্ছেন না গুড় ব্যবসায়ীরা। দ্রুত গুড় পেতে রসে মেশানো হচ্ছে কেমিক্যাল। গুড় উৎপাদনকারীরাই স্বীকার করে নিয়েছেন যে এই কেমিক্যাল কিন্তু বাচ্চাদের পেট খারাপ থেকে নানান অসুখের জন্য দায়ী হতে পাড়ে।
মোয়া বিক্রেতাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল হল গুড়। তাও বাধ্য হয়ে এই ভেজাল গুড়ই কিনছেন তারা। মোয়া প্রস্তুতকারীদের কথায়, আসল গুড়ে মোয়া বানাতে যা খরচ, তার অর্ধেক দামেই পাওয়া যাচ্ছে ভেজাল গুড়। তাই তা দিয়েই চলছে মোয়া, মিষ্টি, পাটালি বানানো।
চিকিৎসকরা কিন্তু সাফ জানাচ্ছেন যে এই ভেজাল গুড়ের কারণে চামড়ায় অ্যালার্জি তৈরি হতে পারে। এমনকি, দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থারও ক্ষতি করতে পারে। গ্রামবাংলা থেকে অনেক দূরে শহরে বাস করলেও ভেজাল গুড়ের ফাঁদে পড়েছেন সকলেই।