অফবিট

নিঃস্বার্থ ভালোবাসা! প্রভুর কাছে ফিরে যেতে অভুক্ত অবস্থাতেই বিশ্রাম না নিয়ে ৬৪ কিলোমিটার পথ হাঁটল পোষ্য কুকুর

পোষ্য কুকুর আর তার প্রভুর মধ্যেকার টান-ভালোবাসা যে কী ধরণের, তা ভাষায় প্রকাশ করা মুশকিল। প্রভু আর পোষ্যের সম্পর্কটা কোনও নির্দিষ্ট সমীকরণে একেবারেই বাঁধা যায় না। বলা হয়, কুকুর প্রভুভক্ত। নিজের প্রভুর জন্য অনায়াসে জীবনও দিয়ে দিতে পারে সে। কুকুর যে মানুষের পরম বন্ধু হয়, তার আরও একবার প্রমাণ মিলল।

পোষ্য থাকলেই যে জীবনের পরম বন্ধু পাওয়া যায়, তা আরও একবার সকলের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল কুপার নামে কুপার নামে এক গোল্ডেন রিট্রিভার। কারণবশত তার প্রভু তাকে ছেড়ে অনেকদূরে পাঠিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু নতুন জায়গায় মন টিকল না কুপারের। খাবার-জল ছাড়াই দুর্গম ৬৪ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে সে ঠিক পৌঁছে গেল তার প্রভুর কাছেই।

খানিকটা বাধ্য হয়েই কুপারকে ছেড়ে দিয়েছিলেন তার প্রভুরা। কাউন্টি লন্ডনডেরি থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল কাউন্টি টাইরোন এলাকায়। গাড়ি চড়ে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে নতুন বাড়িতে পৌঁছনো মাত্রই পালিয়ে যায় কুপার। অনেক খোঁজ করেও অনেকদিন কোনও খোঁজ মেলেনি তার। সকলেই অবাক যে কুকুরটা গেল কোথায়? কেউ ভাবতেও পারেননি কোথায় হতে পারে তার গন্তব্য।

কিন্তু অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখাল কুপার। খাবার-জল তো দূর, বিশ্রাম না নিয়েই শুধু হাঁটছিল সে। জঙ্গল, রাস্তা সব বাধা পেরিয়ে ঠিক প্রভুর কাছে পৌঁছে গেল কুপার। প্রায় ৪০ মাইল অর্থাৎ ৬৪ কিলোমিটার পথ হেঁটে প্রভুর কাছে গিয়েছে সে।

সারমেয়দের নিয়ে কাজ করে, এমন এক সংস্থা জানাচ্ছে, কুপার প্রচণ্ড বুদ্ধিমান। কোনও এক অজানা শক্তি যেন তাকে দিয়ে এই অসাধ্য সাধন করিয়েছে। না ছিল খাবার আর না ছিল জল। বিশ্রামটুকুও নেয়নি সে। নিজের তীব্র ঘ্রাণশক্তি ও মনের জোরে এক মাস ধরে ৬৪ কিলোমিটার দুর্গম পথ হেঁটে সে ঠিক পৌঁছে গিয়েছে নিজের গন্তব্যে।

পশু বিশেষজ্ঞরাও এই ঘটনায় অবাক। ঘটনাটি ঘটেছে আয়ারল্যান্ডে। পশু বিশেষজ্ঞদের মতে, কুপার ফের প্রমাণ করেছে, মানুষের কোনও সাহায্যের ওর প্রয়োজন নেই বরং মানুষেরই ওকে বেশি প্রয়োজন। তবে নিজের পুরনো ঠিকানায় ফিরে গেলেও কুপারকে ফের নতুন জায়গায় পাঠানো হয়। জানা গিয়েছে, সেখানে ভাইবোনদের সঙ্গে বেশ ভালোই রয়েছে সে। খাওয়াদাওয়ার বায়নাক্কা কোনওদিনই ছিল না তার। নতুন জায়গায় নতুন প্রভুর সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে কুপারের।

Back to top button
%d bloggers like this: