অফবিট

আসল হিরো! গরীব পড়ুয়াদের পড়ানোর জন্য শিক্ষকতার পাশাপাশি করেন কুলির কাজ, কুর্ণিশ এই যুবককে

সকলেই ভাবেন নিজের ভালো একটা কেরিয়ার গড়ে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে সুখী রাখার। না, এর মধ্যে ভুল কিছু নেই, কিন্তু পরিবার ছাড়াও বাইরে আর পাঁচটা মানুষের কথা আর ক’জনই বা ভাবেন। তবে ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ রয়েছেন যারা গরীব অসহায় মানুষের কথা ভেবে অনেক কাজ করে থাকেন।

যেমন ওড়িশার নাগেশু পাত্র। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক। দিনের বেলা এক বেসরকারি কলেজে অতিথি শিক্ষকতার দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। আর এরপর শুরু হয় গরীব ছেলেমেয়েদের জন্য তাঁর কোচিং সেন্টার। তবে শিক্ষক ছাড়াও আরও একটি পরিচিতি রয়েছে তাঁর। এই কোচিং সেন্টার চালানোর জন্যই রাতের অন্ধকারে কুলির কাজে নিযুক্ত হন নাগেশু যাতে গরীব পড়ুয়ারা বিনামূল্যে তাঁর সেই কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করতে পারে।

 ‘মুনলাইটিং’ বলে একটি শব্দ ইদানিং বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। দিনের বেলা একটি চাকরি করে অতিরিক্ত উপার্জনের জন্য রাতে আরও একটি কাজে যুক্ত থাকাকেই এই নামে ডাকা হয়। সেই হিসেবে নাগেশুও তেমন কাজই করছেন।

তবে পার্থক্যটা হল যে নিজের জন্য নয়, নাগেশু অতিরিক্ত উপার্জনের পথে হাঁটছেন এক মানবিক কারণে। বেরহামপুর রেল স্টেশনে তিনি অন্যের মোট বইছেন যাতে সেই টাকায় ওই কোচিংয়ের শিক্ষকদের বেতন দেওয়া যায়।

দিনের নাগেশু চাকরি করেন এক বেসরকারি কলেজে অধ্যাপকের ভূমিকায়। আর কলেজ শেষে তিনি পড়াতে যান নিজের খোলা কোচিং সেন্টারে। এরপর রাত হলেই নিজের শিক্ষকতার ভূমিকা ছেড়ে তিনি চলে যান বেরহামপুর স্টেশনে। সেখানে কুলির কাজ করেন তিনি।

আসলে, করোনা কালে গরীব ছেলেমেয়েদের পড়াতে শুরু করেছিলেন নাগেশু। এভাবেই ধীরে ধীরে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়তে থাকলে তা কোচিং সেন্টারের রূপ দেন তিনি। এই মুহূর্তে তাঁর কোচিং সেন্টারে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়ারা পড়ে। এর জন্য চারজন শিক্ষক রয়েছেন। তাদের বেতন দিতেই খরচ হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার মতো। আর সেই টাকা আয় করতেই রাতের বেলা মেহনতি মানুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কুলির কাজ করেন নাগেশু।

নাগেশুর বাড়িতে রয়েছেন তাঁর বাবা ও মা। সংসার চালানোর জন্য অতিথি অধ্য়াপকের চাকরিটি করেন নাগেশু। কিন্তু অধ্যাপকের চাকরি করার পর দিনের শেষে কুলির কাজ করতে কি কোনও কুণ্ঠাই কাজ করে না? এর উত্তরে ৩১ বছরের নাগেশুর জানান, “লোকে যা বলুক বলতে দিন। আমি পড়াতে ভালবাসি। এবং ওই দরিদ্র পড়ুয়াদের পড়ানোর কাজ করে যাব”।

Back to top button
%d bloggers like this: