কলকাতা

সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে প্রবল উত্তেজনা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ-হাতাহাতি, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস

সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করেও যে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন রাজনীতি চলতে পারে, তা অনেকের কল্পনার অতীত। প্রাচীন ও স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে হাতাহাতি-সংঘর্ষে জড়াল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠী। আর তাদের সেই ঝামেলার রেশ পড়ল সাধারণ পড়ুয়াদের উপরও।

সূত্রের খবর, সরস্বতী পুজো কে করবে, এই নিয়ে সমস্যা আগে থেকেই চলছিল। এরইমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ক্যাম্পাসের ভোগ প্রসাদ, আলপনা ও প্যান্ডেল করার জন্য কর্তৃপক্ষের তরফে টেন্ডারের নোটিশ জারি করা হয়। গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছিল এই নোটিশ।

সূত্রের খবর, সেই টেন্ডারের কাজই চলছিল এদিন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রীট ক্যাম্পাস, বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ, টেকনোলজি ক্যাম্পাস সল্টলেক, আলিপুর ক্যাম্পাস, হাজরা ল’ কলেজ ক্যাম্পাস এই পাঁচ ক্যাম্পাসে পুজোর জন্যই এই টেন্ডার। সূত্রের খবর, টিএমসিপির রাজ্যে নেতৃত্বের প্রতিনিধিদের গোষ্ঠীর তরফে কিছু সংস্থাকে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। অন্যদিকে টিএমসিপি নেতা মহম্মদ জিশানের দলবলের তরফেও কিছু সংস্থাকে ডাকা হয়। তখন থেকেই একটা চাপা উত্তেজনা চলছিল। এরইমধ্যে কিছু সাধারণ ছাত্রী ক্যাম্পাসে সরস্বতীর প্রতিমা নিয়ে ঢোকেন।

এক ছাত্রী ঠাকুর নামাতে গেলে তাঁকে বাধা দেয় কিছু পড়ুয়া। সেই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বচসা। তা গড়ায় হাতাহাতিতে। রাজ্য নেতৃত্বের প্রতিনিধি গোষ্ঠীর সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলতে থাকে জিশান গোষ্ঠীর। ক্যাম্পাসে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়।

শেষ পর্যন্ত অশান্তি ঠেকাতে ও সমস্যার সমাধানে দু’পক্ষই পুলিশের দ্বারস্থ হয় বলে খবর। জিশান-সহ সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের একাংশের বক্তব্য, এদিন অভিরূপ চক্রবর্তীর গোষ্ঠীর ছেলেরা হামলা চালায়। তাদের কথায়, বেশ কিছুদিন ধরেই বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে ঢুকছে। এমনকি, তারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছে যাতে সরস্বতী পুজোতেও আইডি কার্ড দেখে পড়ুয়াদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হয়।

এদিনের এই ঘটনায় বেশ কিছুজন আহত হয়েছে বলে খবর। এই  ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি কোহিনূর মজুমদার বলেন, “সকলে মিলে পুজো করছে। সেখানে কেউ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য থাকতেই পারেন। তবে পুজোটা সার্বিকভাবে হচ্ছিল। এই পুজোকে কেন্দ্র করে তর্কাতর্কি হাতাহাতির ঘটনা ঘটে থাকলে তা অনভিপ্রেত। তবে এর সঙ্গে দল, সংগঠন বা রাজনীতিকে মিশিয়ে দেওয়াটা বোধহয় ঠিক হবে না”।

Back to top button
%d bloggers like this: