‘আমার ছেলেকে খু’ন করেছে’, কসবার স্কুলে ছাত্রমৃত্যু ঘটনায় স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল-সহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের ছাত্রের বাবার

গতকাল, সোমবার কসবার সিলভার পয়েন্ট স্কুলে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ক্রমেই রহস্য ঘনাচ্ছে। এই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের দিকে আঙুল রুলেছেন মৃত ছাত্রের বাবা। তাঁর দাবী, করোনা পরিস্থিতির সময় স্কুলের ফি বৃদ্ধি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি। আর তারপর থেকেই তাঁর ছেলের উপর নানান চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল বলে দাবী করেন তিনি। স্কুল প্রোজেক্ট নিয়েও তাঁর ছেলের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল বলে জানান। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁর এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল, ভাইস প্রিন্সিপ্যাল ও আরও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত ছাত্রের বাবা।
তাঁর দাবী, তাঁর ছেলেকে স্কুলই খু’ন করেছে। এই নিয়ে কসবা থানায় স্কুলের প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল-সহ আরও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ১২০ বি ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
কী জানান মৃত ছাত্রের বাবা?
তাঁর কথায়, “পাঁচ তলা থেকে পড়লে হাড়গোড় ভাঙত ছেলের। কিন্তু সে সব কিছুই তো হয়নি”। অন্যদিকে, স্কুল কর্তৃপক্ষ এই দাবী উড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের কথায়, “তদন্ত চলছে। কোনও স্কুলই তাদের পড়ুয়াকে হেনস্থা করে না। যে সমস্ত অভিযোগ করা হচ্ছে, আমাদের কোনও শিক্ষকই এমন আচরণ করেন না”।
প্রসঙ্গত, গতকাল, সোমবার বিকেলের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় ওই এলাকায়। সূত্রের খবর, এ দিন পাঁচ তলায় স্টাফ রুমে শিক্ষকের সঙ্গে প্রোজেক্টের ব্যাপারে কথা বলতে যায় নাবালক। কটি প্রজেক্টের খাতা সে নিয়ে যায়নি। এর জেরে ক্লাসের দুই শিক্ষিকা তাকে বকাঝকা করেন বলে খবর। কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে বলা হয়েছিল ওই পড়ুয়াকে। এরপরই পাঁচতলা থেকে লাফ দেয় সে।
ওই পড়ুয়ার পরিবারের অভিযোগ, প্রথমে স্কুল থেকে বলা হয়েছিল তাদের ছেলে সিঁড়ি থেকে পরে গিয়েছে। মুকুন্দপুরের বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। পরিবারের লোক সেখানে পৌঁছে জানতে পারেন তাদের ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
পরিবারের দাবী, পাঁচতলা থেকে পড়ে গেলে ছেলের হাড় ভাঙার কথা। কিন্তু তার সারা শরীরে কোনও চোট নেই। শুধুমাত্র মুখ কান নাক থেকে গলগল করে রক্ত বের হতে শুরু করে। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। স্টাফ রুমের নজর এড়িয়ে কী ভাবে লাফ দিতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ সূত্রে খবর, স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে ছেলেটি সিঁড়ি দিয়ে একাই উপরে গিয়েছে।