‘দ্য কেরালা স্টোরি’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা মমতার, অন্যদিকে সেই ছবিকেই উত্তরপ্রদেশে করমুক্ত ঘোষণা করলেন যোগী আদিত্যনাথ
বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেনের ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। এই ছবি নিয়ে দেশজুড়ে শোরগোল শুরু হয়েছে। এই ছবির বিষয়বস্তু নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বাংলায় এই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গই প্রথম আজ্য যেখানে এই ছবি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একদিকে মমতা যখন এই ছবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন, অন্যদিকে তখন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ‘দ্য কেরালা স্টোরি’কে উত্তরপ্রদেশে করমুক্ত করার ঘোষণা করলেন।
আজ, মঙ্গলবার সকালে টুইট করে যোগী আদিত্যনাথ জানান যে উত্তরপ্রদেশে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ করমুক্ত করা হবে। টুইটে তিনি লেখেন, “দ্য কেরালা স্টোরি’ উত্তরপ্রদেশে করমুক্ত করা হবে”। উত্তরপ্রদেশই প্রথম রাজ্য নয়, এর আগে গত ৬ই মে বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ সরকারও এই ছবিটিকে করমুক্ত ঘোষণা করে। আজ যোগী আদিত্যনাথ টুইট করে এই ছবিকে করমুক্ত করার কথা জানালেন ।
'The Kerala Story' उत्तर प्रदेश में टैक्स फ्री की जाएगी।
— Yogi Adityanath (@myogiadityanath) May 9, 2023
উত্তরপ্রদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানান উপ-মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক। তিনি বলেন, “দ্য কেরালা স্টোরি-কে করমুক্ত করা খুবই ভালো সিদ্ধান্ত। আমি চাই উত্তর প্রদেশের মানুষ এই ছবিটি দেখুক এবং তাঁরা যাতে বুঝতে পারে, আমাদের বোনেরা কীভাবে কষ্ট পেয়েছে। আমরাও গিয়ে সিনেমাটি দেখব। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এই ছবির ওপর নিষেধাজ্ঞা মেনে নেবেন না”।
গতকাল, সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এই কেরালা স্টোরি, কাশ্মীর ফাইলস কিছু মানুষকে অসম্মান করার জন্য়ই তৈরি হয়। আমি সিপিআইএমকে সমর্থন করছি না। আমি মানুষের কথা বলছি। আমি সিপিএম পার্টির কথা বলছি না। কারণ, তাঁরা বিজেপির সঙ্গে কাজ করছে। এটার সমালোচনা তো তাঁদেরই করা উচিত। কিন্তু তাঁরা তো বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে। আমি সে রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রীকে বলব, তাঁর পার্টি বিজেপিকে সাহায্য করছে। আর সেই কারণেই কেরালা স্টোরি তৈরি হচ্ছে বিকৃত তথ্য নিয়ে”।
এদিনের এই বৈঠকে মমতা খোঁজ নেন রাজ্যের কোন কোন হলে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ চলছে। এর একটা তালিকা তৈরির জন্য মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন তিনি। এরপরই এই ছবিকে বাংলায় নিষিদ্ধ করার কথা বলেন। মমতার কথায়, “এখানে কোনও ঘৃণা চলবে না। কোনও রাজনৈতিক, জাতিগত ঘৃণাকে আমরা প্রোমোট করব না। কোর্ট যদি বলে তবে দেখা যাবে”।
প্রসঙ্গত, গত বছর মুক্তি পায় এই ছবি টিজার। আর তখন থেকেই এই ছবিকে ঘিরে চর্চা শুরু। কিছুদিন আগে ছবির ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে। আর এরপরই এই ছবিকে ঘিরে আরও উত্তেজনা। গোটা কেরল জুড়ে যেন ক্ষোভের সঞ্চার। ২০১৬ সালে কেরলে ২১ জন মেয়ের হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে সুদীপ্ত সেনের এই ছবি। ওই ২১ জন মেয়ে যোগ দেয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইএসআই-এর প্রশিক্ষণ শিবিরে।
কিন্তু কেন হঠাৎ তারা এই নিষিদ্ধ সংগঠনে যোগ দিল? কীভাবেই বা তারা সিরিয়া ও আফগানিস্তানের এই জঙ্গি সংগঠনের প্রশিক্ষণ শিবিরে পৌঁছল? কেনই বা ধর্মান্তকরণে রাজি হল ওই মেয়েরা কারণ তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল হিন্দু আর কিছু খ্রিষ্টান। এই সমস্ত ঘটনাই তুলে ধরা হয়েছে এই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র মাধ্যমে। আর এরপরই শুরু হয় বিতর্ক।