চরম গাফিলতি! ৩ মাস আগে পেটেই মৃত্যু হয়েছে গর্ভস্থ ভ্রূণের, তাও চিকিৎসক জানান ‘বেবি সুস্থ’, জানাজানি হতেই নার্সিংহোমে ভাঙচুর পরিবারের

৫ মাস বয়সেই গর্ভস্থ ভ্রূণের মৃত্যু হয়েছে পেটে। কিন্তু আটমাস হয়ে গেলেও তা জানালেন না চিকিৎসক। শেষে পেটে ব্যাথা নিয়ে প্রসূতিকে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে আলট্রাসোনোগ্রাফি করাতেই জানা গেল ৩ মাস আগে পেটের ভেতরেই মৃত্যু হয়েছে শিশুর। আর তা জানার পরই নার্সিং হোমে ভাঙচুর চালায় প্রসূতির পরিবার। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঠিক কী ঘটেছে ঘটনাটি?
ঘটনাটি ঘটেছে রাণাঘাটে। রানাঘাটের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পূজা রায়। তিনি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর রানাঘাটের একটি নার্সিংহোমে নিয়মিত চিকিৎসা ক্রাতেন। চিকিৎসক অনুপম বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে ছিলেন ওই প্রসূতি। অভিযোগ, আট মাস পর্যন্ত চিকিৎসক জানান বাচ্চা সুস্থ।
কিন্তু হঠাৎই পেটে ব্যথা শুরু হয় মহিলার। এরপরই অন্য জায়গা থেকে আলট্রাসোনোগ্রাফি করাতেই আসল তথ্য জানা যায়। প্রসূতির স্বামীর দাবী, আলট্রাসোনোগ্রাফি করার পর জানা যায় যে ২৬ সপ্তাহে গর্ভের ভ্রূণের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ডাক্তার অনুপম বিশ্বাস বারবার পরীক্ষা করা সত্ত্বেও তাদের কিছু জানান নি। এর জেরেই প্রবল অসুস্থ প্রসূতি। মৃত বাচ্চাকে অপারেশন করে গর্ভ থেকে বের করা হয়। বর্তমানে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি ওই প্রসূতি।
কী করেন রোগীর পরিবার
আসল ঘটনা সামনে আসতেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন পরিবারের সদস্যরা। আজ, সোমবার নার্সিংহোমের সামনে রোগীর আত্মীয় পরিজনরা বিক্ষোভও দেখান। নার্সিংহোমে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ওই অভিযুক্ত চিকিৎসককে হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ।
রোগীর পরিবারের এক সদস্যের অভিযোগ, “বাচ্চাটা ২ মাস আগেই পেটে মারা গিয়েছে। কিন্তু ডাক্তার বলে যাচ্ছিলেন বেবি সুস্থ। রিপোর্ট করতে দিয়েছিল। কালকে ছবি করে দেখা গেল, বাচ্চাটা মারা গিয়েছে। কী বলা যায় আর। আমাদের বিচার চাই”।
নার্সিং হোম থেকে কী জানানো হয়
নার্সিংহোমের এক নার্স এই বিষয়ে বলেন, “এত বছর আমরা এখানে কাজ করছি, কখনও এরকম ঘটনা ঘটেনি। কালকে রিপোর্ট করে বলছে, বাচ্চাটা মারা গিয়েছে। এখানেই ওদের ভর্তি করার কথা ছিল। কিন্তু না করিয়ে মাঝে অন্য জায়গায় ডাক্তার দেখিয়েছে। এখন আমাদের ওপর দায় দিচ্ছে”।