‘দলটা রেস্তোরাঁ হয়ে গিয়েছে, যে কেউ আসছে, ইচ্ছামতো খেয়ে চলে যাচ্ছে’, মুকুল প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মদন

বিগত কয়েকদিন ধরেই বঙ্গ রাজনীতিতে হুলুস্থুল কাণ্ড পড়ে গিয়েছ মুকুল রায়ের (Mukul Roy) দিল্লি যাত্রা নিয়ে। তাঁর এই দিল্লি যাত্রা নিয়ে নানা মুনির নানান মত। তিনি কী আবার বিজেপিতেই ফিরছেন, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। যদিও মুকুলের কথায়, তিনি বিজেপিরই বিধায়ক, তিনি কোনওদিন তৃণমূলে যান নি। এবার তাঁর দিল্লি যাত্রা নিয়ে মন্তব্য করলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)।
বেশ কটাক্ষের সুরেই মদন বলেন, “যে কেউ আসছে, যাচ্ছে, দলটা রেস্তরাঁ হয়ে গিয়েছে। কেউ এসে ফিশ চপ অর্ডার দিচ্ছে, খেয়ে চলে যাচ্ছে। কেউ এল কাটলেট খেল, ফিশফ্রাই অর্ডার দিয়ে খেয়ে চলে গেল, ইচ্ছেমতো”। শুধু তাই নয়, এরপরই আশঙ্কাভরা শব্দে মদনের সংযোজন, “এবার তো সবাই মুকুলের পথে হাঁটবে”।
গত সোমবার রাতে মুকুলের দিল্লি যাত্রা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। এরপর মঙ্গলবার দিনভর তা নিয়ে নানান মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্য চলতে থাকে। তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু রায় দাবী করেছিলেন যে তাঁর বাবাকে অপহরণ করা হয়েছে। থানায় অভিযোগও করেছিলেন তিনি। মুকুল রায় পরে জানান যে তিনি বিজেপিতে ফেরার জন্যই দিল্লি গিয়েছেন।
যদিও মদনের কথার প্রেক্ষিতে মুকুল বলেন, “কয়েক ঘণ্টার জন্য আমি তৃণমূলে গিয়েছিলাম”। বস্তুত এরপরই গত একবছরে মুকুলের কার্যকলাপ নিয়ে কটাক্ষ করে দলের উদ্দেশেই ঘুরিয়ে মদনের প্রশ্ন, “গত বছর ২১ জুলাই মমতা অভিষেকের পাশেই মুকুলের চেয়ার ছিল। বিজেপিতে চলে গিয়ে সব খবর দিয়ে তারপর পাগল সেজে এলে মঞ্চে জায়গা হয়ে যাবে”।
মুকুল সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “মুকুল রায় কোথায় যাবেন, কোথায় যাবেন না, সেটা তাঁর ব্যাপার। মুকুল রায় বিজেপির বিধায়ক”।
মুকুলকে তৃণমূলে নেওয়ার প্রেক্ষিতে কটাক্ষ করে মদন মিত্র বলেন, “মুকুলকে নেওয়ার সময় মনে হচ্ছিল, দিল্লিতে বিজেপির সিংহাসন দখল করে ফেললাম আমরা”। তিনি এও জানান, এমন মন্তব্যের করার জন্য দল যদি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয় তার জন্য তিনি তৈরি। তাঁর কথায়, “এটা শুভেন্দু অধিকারীর গেমপ্ল্যান। মুকুলকে দিয়ে কিছু নাম বলানো হবে, যাতে মানুষ বিশ্বাস করে। তাই মুকুল রায়কে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে”।
এরপরই হিন্দি সিনেমার উদাহরণ টেনে অক্ষয় কুমার অভিনীত একটি ছবির কথা উল্লেখ করে মদন বলেন, “ওই সিনেমায় শরীরে চিপ ঢুকিয়ে দিলে লোকেশন ট্র্যাক হয়ে যাবে ও সব গোপন তথ্য বেরিয়ে আসবে। বিজেপি তার ডিজিটাল টিম দিয়ে এই কাজ করাচ্ছে না তো? এ সব না করলে তো মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তো কিছু করা যাচ্ছে না”।
বিজেপিকে কটাক্ষ এখানেই থেমে থাকেন নি মদন। ব্যঙ্গের সুরে তিনি বলেন, “এই ঘটনায় আমি খুব চিন্তিত। বাড়িতে বলেছি, কেউ কোনও ইঞ্জেকশন দিতে এলে যাচাই করে নিতে। বিজেপি হয়তো নতুন কোনও চিপ বের করেছে। সেটা মানুষের শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে”।