রাজ্য

ওজন ১০২ কেজি, জং ধরা পিস্তল উঁচিয়েই সোনার দোকানের ডাকাতদের ধাওয়া, রাণাঘাটের নতুন ‘হিরো’ এখন এই এএসআই

যেন কোনও সিনেমার দৃশ্য! সোনার দোকানে ডাকাতি করে পালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। পেছনে ঘুরে বারবার ছুঁড়ছে গুলি। আর তাদের আটকাতে প্রাণপণে ছুটছেন রাণাঘাটের পুলিশ কর্মী রতনকুমার রায়। হাতে জং ধরা পিস্তল উঁচিয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই ডাকাতদের ধাওয়া করলেন তিনি। পাল্টা গুলিও চালালেন। এই এএসআই-ই এখন রাণাঘাটের নতুন হিরো।

কে এই এএসআই?

তাঁর চেহারা ভারির দিকে। ওজন ১০০-র বেশি। যা নিয়ে মাঝেমধ্যেই বন্ধুদের মহলে কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। কিন্তু মনের সাহস আর কাজ করতে চাওয়ার ইচ্ছেটাই যে শেষ কথা, চেহারা যে কোনও প্রতিবন্ধকতা নয় তা মঙ্গলবার বিকেলে প্রমাণ করে দিয়েছেন রতনবাবু। পুলিশি রিভলবার নিয়েই ছুটে গিয়েছিলেন দুষ্কৃতীদের ধরতে। তাঁর সাহসিকতাতেই উদ্ধার হয়েছে প্রচুর সোনা-গয়না।

পুলিশের ফিটনেস নিয়ে বারে বারে প্রশ্ন ওঠে। ওজন কমাতে নানা ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরের রতনবাবুর ডাকাতদের ধাওয়া করার অভিযান যেন ফিটনেস নিয়ে ওঠা সব প্রশ্নকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। তিনি একাই দুষ্কতীদের গুলির প্রত্যত্তুর দিয়েছেন জং ধরা রিভলভার দিয়ে। চেহারা যাই হোক তাঁর অব্যর্থ লক্ষভেদ ঘায়েল করেছে দুটি ডাকাতকেও। ধরে পড়েছে দলের পাঁচ দুষ্কৃতী।

মঙ্গলবারের অভিযানের পর রতন কুমার রায় বলছেন, খবর পাওয়ার পর ডাকাতদের পালাতে না দেওয়াটাই প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশের সম্মান রক্ষার বিষয়টিও তাঁর মাথায় ঘুরছিল। তাই ভয় পাননি। ডাকাতদের পিছনে ধাওয়া করার সময় শুধু মনে হচ্ছিল গুলি যেন শেষ না হয়ে যায়। এএসআইয়ের দাবি, নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সব পুলিশের এধরনের কাজে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

ডাকাত তাড়া করার এই ভিডিও ভাইরাল হতেই স্বামীকে ফোন করেছিলেন তাঁর স্ত্রী। স্বামীর এই দুঃসাহসিকতায় আতঙ্কিত হলেও মুগ্ধ রতনবাবুর স্ত্রী বলেন, “গর্ব হচ্ছে। তবে ভিডিওগুলো দেখছি আর আঁতকে উঠছি। যদি একটা গুলি ওর লেগে যেত”। ডিপার্টমেন্টের এই সাহসী পুলিশ কর্মীর অভিযান নিয়ে খুশি রানাঘাটের পুলিশ জেলার সুপার কে কান্নান।

Back to top button
%d bloggers like this: