রাজ্য

‘দুয়ারে ভূত’! ‘নেতা ভূত আর চেলা ভূত মিলে দুয়ারেতে সব জড়ো’, ‘দিদির দূত’ নিয়ে নতুন ছড়া রুদ্রনীলের, ফের কটাক্ষ শাসক শিবিরকে

ফের একবার স্বমহিমায় রুদ্রনীল ঘোষ। রাজ্য সরকারের নানান বিষয় নিয়েই নিজের মতো করে কটাক্ষ শানিয়ে থাকেন তিনি। প্যারোডি ছড়াই হোক বা নিজের তৈরি করা ছড়া, সবেতেই শাসক শিবিরকে কড়া ভাবে তোপ দাগেন তিনি। এবারও এর অন্যথা হল না। এবার রুদ্রনীলের তীর ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’ কর্মসূচি ও ‘দিদির দূত’দের দিকে।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে জনসংযোগ বাড়াতে নয়া কর্মসূচি এনেছে তৃণমূল। এই কর্মসূচিতে নানান তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা নানান এলাকায় গিয়ে জনসাধারণের অভাব-অভিযোগ শুনছেন। এর জেরে আমজনতার ক্ষোভের মুখেও পড়তে হচ্ছে তাদের। তা নিয়ে বেশ বিতর্কও দানা বেঁধেছে।

এই ‘দিদির দূত’ নিয়ে বলতে গিয়েই রুদ্রনীল বলেন যে যে সমস্ত ভূত (পড়ুন তৃণমূল নেতা) সাধারণ মানুষের থেকে চুরি করেছে, তাদেরই টাকা নয়ছয় করেছে, তারাই আবার মানুষের ‘দুয়ারে’ গিয়ে তাদের হালহকিত জানতে চাইছে। বিজেপি নেতার কথায়, তৃণমূল নেতারা যে দুর্নীতি করে এসেছে এতদিন, তা কী আদৌ তাদের এই কর্মসূচি দিয়ে ঢাকা দিতে পারবে।

কোথাও রুদ্রনীল বলেছেন, “নেতা ভূত আর চেলা ভূত মিলে দুয়ারেতে সব জড়ো/গ্রামবাসী তাই দুশ্চিন্তায় আজ বড় জড়সড়/জব কার্ড বা আবাসের টাকা কিংবা দেবে কি রাস্তা/একুশের ভোটে দিয়েছিল ভূতে প্রতিশ্রুতির বস্তা”। বিজেপি নেতার কথায়, যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা পালন করা হয়নি।

শুধু তাই-ই নয়, নিজের এই কবিতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরোক্ষভাবে ‘ভূতেদের রানি’ বলেও তোপ দাগেন রুদ্রনীল। তিনি বলেন, “ভূতেদের রানি দিয়েছিল বাণী উন্নয়নের ঢেউ/ঢপের ঢেউয়ে ডুবেছে সবাই, বাকি পড়ে নেই কেউ”।

বিজেপি নেতার কথায়, “তবু কেউ ভাবে এবার সে পাবে ভূতের রানির বর, মুখ ফুটে তাঁরা প্রাপ্য চাইতে জুটেছে সপাটে চড়”। তিনি এও কটাক্ষ করে বলেন যে মানুষকে ভয় দেখিয়ে ‘থ্রেট’ দিয়ে সকলের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়।

দুর্নীতির দায়ে যেসমস্ত তৃণমূল নেতা অভিযুক্ত, তাদের নিয়ে রুদ্রনীল বলেন, “কিছু আছে জেলে কিছু আছে বেলে কিছু তো অকুতোভয়, মটকাতে ঘাড় অপেক্ষা করে কখন সন্ধ্যা হয়”।

এমনকি, সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাস বয়কট করে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন, তা নিয়েও নিজের কবিতায় কথা বলেছেন রুদ্রনীল। তাঁর কথায়, সেই তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা চান না যে অপরাধীরা শাস্তি পাক।

এভাবেই গণতন্ত্রের গলা টেপা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে রুদ্রনীল এও বলেন যে মানুষ ধীরে ধীরে এবার ক্ষোভ জারি করতে শুরু করেছে। এই সমস্ত ‘ভূতদের’ তাড়াতে আমজনতাই ‘ওঝা’ রূপে তৈরি হচ্ছে। নিজের কবিতার শেষে রুদ্রনীল সাবধান করে এও বলেন, “মনের ভুলে ছিটকিনি খুলে যেও নাকো দরজায়”।

তবে নিজের এই কবিতায় তিনি কোথাও সরাসরি ভাবে শাসক দল বা কোনও তৃণমূল নেতা-নেত্রীর নাম নেন নি। তবে তাঁর এই সমস্ত খোঁচা যে ঠিক কোনদিকে ছিল, তা আর কারোর বুঝতে বাকি নেই।

Back to top button
%d bloggers like this: