মধ্যযুগীয় বর্বরতা! বিয়ের কথা লুকিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে প্রেম, জানতে পেরেই বিবাহিত শিক্ষককে ঘুষি-লাথি প্রেমিকার পরিবারের, জরিমানা ৮ লক্ষ টাকা

হাত-পা মোটা দড়ি দিয়ে বাঁধা। চলছে বেধড়ক মারধর। লাথি-ঘুষি কিছুই বাদ যাচ্ছে না। আর এসব দেখে কেউ থামাতেও আসছে না। মারের চোটে মাথা ফেটে রক্ত পড়লেও, মার আর থামে না। এমনই এক মধ্যযুগীয় বর্বরতার ছবি ধরা পড়ল পশ্চিম মেদিনীপুরের শ্রীরামপুর গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে এসে এই হাল হয়েছে এক ব্যক্তির। বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তা লুকিয়ে প্রেম করেছেন তিনি। তাই সেই অপরাধে সালিশি সভা ডেকে ওই ব্যক্তিকে ৮ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। মারের কারণে এখন ওই ব্যক্তি এক সরকারি হাসপাতালে ভর্তি।
জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি কেশপুর থানার নেড়াদেউলের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রামের এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান ওই ব্যক্তি। কয়েক দিন আগে কলেজছাত্রীর পরিবার জানতে পারেন যে ওই শিক্ষক বিবাহিত। এরপরই এমন কাণ্ড।
সূত্রের খবর, গত শুক্রবার কলেজছাত্রীর সঙ্গে শ্রীরামপুরে দেখা করেন ওই শিক্ষক। তাদের নাকি এলাকায় ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা যায়। এরপরই স্থানীয়রা ঘিরে ধরে দু’জনকে। গাছে বাঁধাও হয় ওই শিক্ষককে। তারপর বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মারধরের ভিডিও ভাইরাল করা হয়।
কলেজছাত্রীর পরিবারের লোকজনও বাধা দেননি কাউকে। কলেজছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের কথা লুকিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করেন ওই শিক্ষক। তিনি প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ। ওই শিক্ষককে গ্রামের সালিশি সভায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিদান দেওয়া হয় যে ওই শিক্ষককে ৮ লক্ষ টাকা দিতে হবে।
এমন মারের চোটে ওই অসুস্থ শিক্ষককে ভর্তি করানো হয় সরকারি হাসপাতালে। চন্দ্রকোণা থানার পুলিশ জানিয়েছে, এই নিয়ে কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ জানায়নি। শিক্ষকের পরিবারের তরফেও এই নিয়ে কিছু বলা হয়নি। কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, শাসকদলের কয়েক জন নেতা এবং গ্রামের মাতব্বররা এই মারধরের ঘটনায় জড়িত। এই কাজকে কেউ সমর্থন না করলেও ভয়ের চোটে কেউ প্রতিবাদ করেন নি বলে জানান তারা।