খেলা

‘ভারতীয় জাতীয় সঙ্গীতের সময় সকলকে উঠে দাঁড়াতে হবে, তবেই হিজাব পরব’, ইরানের মাটিতে দাঁড়িয়ে পদক নেওয়ার সময় সাফ জানালেন ভারতীয় শাটলার

হিজাব না পরলে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া যাবে না, ভারতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়দের একথা সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় ইরানের টুর্নামেন্টে। সেই কারণে বাধ্য হয়েই হিজাব পরে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে পদক নেন সোনাজয়ী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় তানিয়া হেমান্থ। ওই একই টুর্নামেন্টে রানার আপ হয়েছেন তাসনিম মীর। তাঁকেও হিজাব পরার নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশ অনুযায়ী সেই হিজাব পরলেও এর পাশাপাশি নিজের দেশের সংস্কৃতি ও সম্মানও রক্ষা করেছেন তিনি। তাঁর বাবা জানান যে তাসনিম সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে ভারতীয় জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন সকলকে উঠে দাঁড়াতে হবে, তবেই তিনি হিজাব পরবেন।

১২ জন ভারতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় অংশ নিয়েছিলেন ইরান ফজির ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জে। মহিলাদের সিঙ্গলসের ফাইনালে ওঠেন দুই ভারতীয়- তানিয়া হেমান্থ ও তাসনিম মীর। গতবারের চ্যাম্পিয়ন তাসনিমকে স্ট্রেট সেটে হারিয়ে সোনা জিতেছেন তানিয়া।

এরপরেই এই টুর্নামেন্ট বিতর্কের মধ্যে পড়ে। লিখিত নিয়ম না থাকা সত্ত্বেও আয়োজকরা জানান যে হিজাব না পরলে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া যাবে না। সেই কারণে বাধ্য হয়েই সহিজাব পরে পদক নেন তানিয়ারা। সেই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই বেশ বিতর্ক শুরু হয়।

এমন পরিস্থিতিতে এবার এই  নিয়ে মুখ খুললেন ফজির চ্যালেঞ্জের রানার আপ তাসনিমের বাবা ইরফান আলি। পদক প্রদান অনুষ্ঠানের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, “পদক নিতে পোডিয়ামের দিকে এগোচ্ছিল তাসনিম। সেই সময়ে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো শুরু হয়। কিন্তু টুর্নামেন্টের আধিকারিকরা সকলে বসেছিলেন। তখনই পদক না নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে আমার মেয়ে। সকলকে বলে, ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের সময়ে সকলকে দাঁড়াতে হবে। কারণ আপনাদের কথা মেনে ইরানের সংস্কৃতি পালন করা হচ্ছে। আপনাদেরও উচিত ভারতকে সম্মান করা”।

এই ঘটনার পর আধিকারিকরা সকলেই উঠে দাঁড়ান। আন্তর্জাতিক মঞ্চে যেভাবে গুজরাতের বাসিন্দা তাসনিম দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে, তাতে বেজায় খুশি তাঁর বাবা। মেয়ের জন্য খুবই গর্বিত বোধ করছেন ইরফান।

এই হিজাব বিতর্ক প্রসঙ্গে ইরফান বলেন, “সাধারণত হিজাব পরে না তাসনিম। কিন্তু ইরানের প্রথা মেনে পদক প্রদানের অনুষ্ঠানে হিজাব পরেছিল। কিন্তু সেই সঙ্গে নিজের দেশের পরিচয় ভুলে যায়নি। সাফ দাবি করেছিল, সম্মান দিতে হবে ভারতের জাতীয় সঙ্গীতকেও”।

Back to top button
%d