রাজ্য

অমানবিক! সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে ভাইয়ে-ভাইয়ে বিবাদ, অশান্তি, দেড় দিন ধরেই ঘরেই পড়ে রইল বাবার মৃতদেহ

অমানবিকতার চূড়ান্ত। বাবা ছোটো ছেলেকে বেশি সম্পত্তি দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু সম্পত্তির সমান ভাগ চাই সন্তানদের। এই নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে চলল চরম বিবাদ। আর ওদিকে ঘরের কোণায় পড়েই রইল মৃত বাবা। দেড় পেরিয়ে গেলেও শেষকৃত্য হল না। এমন ঘটনা ঘটল পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ২ ব্লকের বাজকুল গ্রামে।

কী ঘটেছে ঘটনাটি?

জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ২ ব্লকের বাজকুল গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তেজেস্কর অধিকারী। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। কেরোসিন তেলের ডিলার ছিলেন তেজেস্করবাবু। প্রচুর সম্পত্তি ছিল তাঁর। জমি-বাড়ি মিলিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি।

তেজেস্করবাবুর তিন ছেলে ও এক মেয়ে। এক ছেলে আগেই মারা গিয়েছে। গত ১০ বছর ধরে ছোটো ছেলের কাছেই থাকতেন তেজেস্করবাবু। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। জানা গিয়েছে, তিনি নিজের ছোটো ছেলেকে বেশি সম্পত্তি দিয়ে গিয়েছেন। এই নিয়ে আগেই আপত্তি জানিয়েছিল তাঁর বাকি সন্তানরা। বাড়িতে সালিশি সভাও বসেছিল। কিন্তু তেজেস্করবাবু জানিয়েছিলেন ছোটো ছেলে যেহেতু তাঁর দেখাশোনা করেছে, তাই তিনি তাঁকেই বেশি সম্পত্তির ভাগ দেবেন।

এই বিষয়টি কোনওভাবেই মানতে পারে নি বাকি সন্তানরা। মঙ্গলবার রাতে তেজেস্করবাবুর মৃত্যু হলে তাঁর দুই ছেলের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ চরম আকার ধারণ করে। বড় ছেলের দাবী, তাঁর ছোটো ভাই ভুল বুঝিয়ে বেশি সম্পত্তি বাবাকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন। এমনকি, বাবার মরদেহ ঘরের মধ্যে রেখে দরজায় তালা লাগিয়ে দেন ওই ছেলে। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, সম্পত্তির সমান ভাগ না হলে বাবার দেহ দাহ করতে দেবেন না তিনি। চরম অশান্তি চলতে থাকে ভাইয়ে-ভাইয়ে।

এদিকে মঙ্গলবার রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে বেলা গড়িয়ে গেলেও তেজেস্করবাবুর মৃতদেহ দাহ করে না তাঁর ছেলেরা। দেড় দিন তাঁর দেহ ঘরে পড়ে থাকায় পচা দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু হয়। স্থানীয়রা এই খবর দেন পুলিশ, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের। শেষমেশ সকলের চাপে পড়ে বাবার শেষকৃত্য করেন দুই গুণধর ছেলে।  

Back to top button
%d bloggers like this: